পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ লোক দেখানো ইবাদত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘...যে ব্যক্তি তার রবের সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে, সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে অংশীদার না করে।’ (সূরা : কাহাফ, আয়াত : ১১০)
রাসুল (সা.) রিয়া বা লোক দেখানো আমলকে ছোট শিরক বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক নিয়ে যত ভয় পাচ্ছি, অন্য কোনো ব্যাপারে এত ভীত নই।’ সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, ছোট শিরক কী? তিনি বলেন, রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয়তা। মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের প্রতিদান দেওয়ার সময় বলবেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে যাদের দেখানোর জন্য আমল করতে তাদের কাছে যাও। তাদের কাছে দেখো তোমাদের কোনো প্রতিদান আছে কি না?’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২২৫২৮)
প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ পড়া ফরজ। কিন্তু যথাযথভাবে নামাজ না পড়লে নামাজ কবুল হয় না। কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশিত পন্থায় নামাজ আদায় করা জরুরি। এর ব্যত্যয় ঘটলে হিতেবিপরীত হতে পারে। অর্থাৎ নামাজ কোনো কোনো ব্যক্তিকে জাহান্নামে নিয়ে যেতে পারে। যারা লোক দেখানো নামাজ পড়ে, তাদের নামাজ কবুল হয় না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং ধ্বংস সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন—যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।’ (সূরা মাউন, আয়াত : ৪-৬)
লোক দেখানো নামাজ মুনাফিকদের নামাজ। যেমন—মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়, আর তিনিও তাদের ধোঁকায় ফেলেন। ওরা যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়—লোক দেখানোর উদ্দেশে। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪২)
সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুনাফিকদের ওপর সবচেয়ে ভারী নামাজ হলো এশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এই নামাজের ফজিলতের কথা জানত, তাহলে হাঁটুতে ভর দিয়ে হলেও এ নামাজে হাজির হতো। আমার মন চায় যে আমি তাকবির দিয়ে কাউকে ইমামতির স্থানে দাঁড় করিয়ে দিই, অতঃপর আমি লোকদের বলি, তারা যেন জ্বালানি কাঠ নিয়ে এসে ওই সব লোকদের বাড়ির চতুর্দিকে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়—যারা জামাাতে হাজির হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫১)। মূল কথা হলো, পূর্ণ আল্লাহভীতি, খুশু-খুজু ও একাগ্রতা ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। মহান আল্লাহ আমাদের সেভাবে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন।