এক সাক্ষাৎকারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ বলেছেন, "তিন শিশুসহ অন্তত ছয়জন রোহিঙ্গা এবং ১৫ জন বাংলাদেশি বন্যা ও ভূমিধ্বসে মারা গেছে। বন্যার পানিতে আটকা পড়েছেন দুই লাখ মানুষ।" শুক্রবার (৩০ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, বন্যায় ২১ হাজারেরও বেশি শরণার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং প্রায় চার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
রোকেয়া বেগম নামে এক রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, “এটি দুঃপ্নের মতো। আমি গত চার বছরে ক্যাম্পগুলোতে এমন বন্যা দেখিনি। যখন বন্যার পানি আসছিল, আমি তখন বাড়িতে একা ছিলাম। আমাকে সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না। কিন্তু আমি আমার জিনিসপত্র নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছি। এখন আমি অন্যদের ঘরে থাকছি।”
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ শিবির স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্বাস্থ্য ক্লিনিক, টয়লেট, রাস্তা-ঘাট ও সেতুসহ হাজার হাজার সুবিধা। বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার বাংলাদেশ মিশনের ডেপুটি চিফ ম্যানুয়েল মার্কেস পেরেইরা বলেন, “আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর ফলে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়তে পারে।”
বালুখালী শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা আবু সিদ্দিক বলেন, "কোনোভাবে আমার পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু পাহাড় থেকে নেমে আসা কাদা আমার বাড়িতে ঢুকে পড়েছে। আমাদের সমস্ত জিনিসপত্র কাদায় আচ্ছাদিত।"
২০১৭ সালে প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের সামরিক অত্যাচার থেকে পালিয়ে আসার পর প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয় এবং সৃষ্টি হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী বসতির। শরণার্থীরা সাধারণত বাঁশ এবং প্লাস্টিকের চাদরে তৈরি ঘরে থাকেন, যা পাহাড়ের উপরে নির্মিত। iqna