পবিত্র কুরআনের ২০তম সূরার নাম "ত্বাহা"। এই সূরায় মোট ১৩৫টি আয়াত রয়েছে এবং ১৬তম পারায় অবস্থিত। সূরা ত্বাহা একটি মাক্কী সূরা। নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরটি ৪৫তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
সূরা ত্বাহার একটি উল্লেখযোগ্য অংশে হযরত মূসা (আ.) ও তার ভাই হারুনের (আ.) কাহিনী তুলা ধরা হয়েছে; এছাড়াও হযরত আদম (আ.) এবং তাকে বেহেশত থেকে বহিষ্কার করার বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
এই বিষয়গুলি ছাড়াও, এই সূরায় মাবদা এবং পুনরুত্থান, একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করার ফলাফল, সবকিছুতে মধ্যপন্থা ও সংযমের উপর জোর দেওয়া, কুরআনের মাহাত্ম্য এবং আল্লাহ তায়ালার মহিমা ও সৌন্দর্যের কিছু বৈশিষ্ট্যের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
হযরত মুসার (আ.) কাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন সূরায় উল্লেখ করা হয়েছে।. সূরা ত্বাহায় হযরত মূসা (আ.) এর কাহিনী অন্য কোণ থেকে আলোচনা করা হয়েছে এবং মূসার (আ.) অধিকাংশ ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্ব দেখা যায়।
হযরত মুসা (আ.)-এর ব্যবস্থাপনায় প্রথম বিষয় হলো আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। তিনি যখন ঐশ্বরিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ফেরাউনের দরবারে যান, তখন তিনি মহান আল্লাহকে সম্বোধন করে বলেন:
رب اشرح لی صدری؛ و یسر لی امری
সে (মূসা) বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার জন্য আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দাও, আমার জন্য আমার কর্ম সহজ করে দাও।
সূরা ত্বাহা, আয়াত: ২৫ ও ২৬।
এই সূরার দ্বিতীয় পয়েন্ট হল আপনার দুর্বলতা এবং শক্তি খুঁজে বের করা। মনে হয় ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রথমেই নিজেকে মূল্যায়ন করা উচিত এবং ত্রুটিগুলো দূর করার চেষ্টা করা উচিত। তাই মূসা আল্লাহকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন:
وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِنْ لِسَانِي؛ يَفْقَهُوا قَوْلِي
আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও, যাতে তারা আমার কথা সহজে বুঝতে পারে।
সূরা ত্বাহা, আয়াত: ২৭ ও ২৮।
প্রচার এবং কার্যকরী কাজের উপর জোর দেওয়া হল আরেকটি বিষয় যার উপর হযরত মূসা (আ.) জোর দিয়েছেন এবং আল্লাহকে অনুরোধ করেছেন যেন তিনি তার জিহ্বার মাধ্যমে এমনভাবে কথা প্রবাহিত করেন, যাতে সবাই তা সহজেই বুঝতে পারে।
হজরত মুসা (আ.)-এর ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে দলগত কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে দল গঠনের মাধ্যমে ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে তাদের দায়িত্বের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ দল প্রস্তুত করা। মুসা (আ.) তাঁর ভাই হারুনকে (আ.) এই দল গঠনের জন্য বেছে নেন, কারণ তিনি তার যোগ্যতা ও ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন।