IQNA

ইতালির ডানপন্থী দলগুলোর বিজয় কি ইসলামোফোবিয়াকে উসকে দেবে?

16:37 - September 27, 2022
সংবাদ: 3472542
তেহরান (ইকনা): ইতালির নির্বাচনে ডানপন্থী দলগুলোর বিজয়ের পর এবং এসব দলের নেতাদের ইসলামবিরোধী বক্তব্যের কারণে এদেশে ইসলামফোবিয়া বৃদ্ধির আশঙ্কা ও উদ্বেগ বেড়েছে।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৬শে নভেম্বর, সোমবার সকালে রিপোর্ট করেছে যে, দেশটির সংসদীয় নির্বাচনে অতি-ডানপন্থী দলগুলি এগিয়ে রয়েছে এবং সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা গঠনের জন্য যথেষ্ট ভোট পেতে পারে। ইতালিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উগ্র ডানপন্থী দলগুলো এই প্রথম সংসদ নির্বাচনে এত বড় জয় পেয়েছে।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, সিনেট নির্বাচনে প্রায় ৮০% ভোট দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিনিধি পরিষদের জন্য ৭০% এর বেশি ভোট গণনা করা হয়েছে।
 
আর এ কারণে ইতালির জাতীয় নির্বাচনে জয় পাওয়ার দাবি করেছেন উগ্র ডানপন্থী নেতা ব্রাদার্স অব ইতালির প্রধান জর্জিয়া মেলোনি (৪৫)। এর ফলে তিনিই হতে যাচ্ছেন দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।
 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব মিলিয়ে ডানপন্থীদের জয়ে ইতালি অনিশ্চয়তার পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।
 
এবার ব্রাদার্স অব ইতালি বেশ ভালো ফলাফল করলেও তার সম্ভাব্য জোটসঙ্গীদের অবস্থা বেহাল। গত নির্বাচনের তুলনায় অনেক খারাপ ফল করেছে মাত্তেও সালভিনির লিগ নর্দা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ১৭ শতাংশ ভোট পেলেও এবার মাত্র ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে দলটি।
 
অন্য জোটসঙ্গী সিলভিও বারলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়া পেয়েছে ৮ শতাংশ ভোট, গতবার পেয়েছিল ১৪ শতাংশ ভোট। তার পরও সব মিলিয়ে প্রায় ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে মেলোনির ডানপন্থী জোট পার্লামেন্টের উচ্চ ও নিম্ন উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে বলে আভাস রয়েছে।
 
অন্যদিকে কট্টর ডানপন্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে এনরিকো লেত্তার ডেমোক্রেটিক পার্টি ১৯ শতাংশ ও জিউসেপ্পে কন্তের ফাইভ স্টার মুভমেন্ট ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অভিবাসন ও ন্যূনতম মজুরির মতো বিষয়ে নীতিগত মিল থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কারণে জোট গঠন করা হয়নি তাঁদের।
 
নিন্দিত ফ্যাসিস্টদের ‘ঈশ্বর, দেশ ও পরিবার’ এই বিতর্কিত স্লোগানকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালান জর্জিয়া মেলোনি। গতকাল সোমবার সকালে তিনি বলেন, ‘অনেকের জন্য এটা ছিল গর্বের রাত, মুক্তির রাত। আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে আমাদের নিজেদের প্রমাণ করার কাজ শুরু করতে হবে। ইতালীয়রা আমাদের নির্বাচিত করেছে। আমরা বিশ্বাসঘাতকতা করব না, যেমনটা আগেও কখনো করিনি। ’
 
মেলোনির জয়ের ঘটনাকে দেশের জন্য ‘এক দুঃখের রাত’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির এক নেতা। আপসহীন বিরোধীদল হিসেবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন ফাইভ স্টার মুভমেন্ট নেতা জিউসেপ্পে কন্তে।
 
 
স্পেনের উগ্র ডানপন্থী দল ভক্সের নেতা সান্তিয়াগো আবাসকাল বলেন, ‘সার্বভৌম দেশ নিয়ে গড়া একটি গর্বিত ও স্বাধীন ইউরোপের পথ দেখিয়েছেন মেলোনি। তবে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেস সতর্ক করে বলেছেন, ‘জনতুষ্টিবাদীদের আন্দোলন বিকশিত হতে পারে, কিন্তু আকস্মিক বিপর্যয়ের মাধ্যমেই এর সমাপ্তি হয়। ’
 
ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে সংশয়ী মনোভাব পোষণ করলেও ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন আছে জর্জিয়া মেলোনির। ইতালি ইইউ থেকে বেরিয়ে আসুক—এখন আর তা চান না তিনি। তবে রোম এখন থেকে নিজের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেবে বলে জানিয়েছেন। ইউক্রেন ইস্যুতে মেলোনির দেশীয় রাজনৈতিক মিত্রদের অবস্থান ভিন্ন। মাত্তেও সালভিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে সিলভিও বারলুসকোনির সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব রয়েছে। সম্প্র্রতি বারলুসকোনি বলেছেন, পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। 4088045
captcha