IQNA

শিখদের উপাসনালয়ে জুমার নামাজ 

0:01 - November 20, 2021
সংবাদ: 3471000
তেহরান (ইকনা): ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা একটি বড় সমস্যা। তবে সম্প্রীতির উদাহরণেরও কোনো অভাব ছিল না। এসব ঘটনা মানুষকে প্রেরণা দিয়েছে। এ রকম নতুন উদাহরণ তৈরি করলেন ভারতের দিল্লির পাশের হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রাম জেলার এক হিন্দু ব্যবসায়ী ও শিখ ধর্মাবলম্বীরা।
গুরুগ্রামে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কয়েকটি জায়গায় শুক্রবার দিন জুমার নামাজ আদায় করত মুসলমানরা। স্বাভাবিকভাবেই এটা চলছিল। কিন্তু ১৭ সেপ্টেম্বর ‘ভারত মাতা বাহিনী’ নামের একটি সংগঠনের নেতা দীনেশ ভারতীর নেতৃত্বে কিছু লোক জুমায় বাধা দেয়। গুরুগ্রামের ৪৭ সেক্টরের এ ঘটনার পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে ১২ নম্বর সেক্টর ও আরও কয়েকটি জায়গায় এমনটি ঘটতে থাকে।
 
ভারতীয় গণমাধ্যম স্ক্রল ডট ইন জানায়, এ অবস্থায় অক্ষয় যাদব (৪০) নামের এক বন্য প্রাণী পর্যটন ব্যবসায়ী ১২ নভেম্বর (শুক্রবার) ১২ নম্বর সেক্টরে নিজের ঘরে, মালিকানাধীন হাসপাতালের ছাদে এবং খালি থাকা একটি দোকানে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য মুসলমানদের আহ্বান জানান।
 
থাকার জায়গা হওয়ায় ঘরে এবং ছাদে উঠতে জটিলতা থাকায় হাসপাতালে না করে শুধু যাদবের খালি দোকানে জুমার নামাজের ব্যবস্থা করেন স্থানীয় মুসলমানরা। 
 
তাওফিক আহমেদ বলেন, ‘সব হিন্দু এক রকম নয়, এটাই আমি সবার মধ্যে প্রচার করছি। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে সমাজে অবিশ্বাস অনেক কমবে, মানুষ আশ্বস্ত হবে।’ 
 
যাদবের পর একই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে এলেন গুরুগ্রামের শিখ ধর্মের নেতারা। গত বুধবার নিজেদের উপাসনালয়ে বা গুরুদুয়ারায় জুমার নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয় শিখদের স্থানীয় সংগঠন ‘শ্রী গুরু সিং সভা’। নিজেদের সংগঠনের অধীনে থাকা পাঁচটি গুরুদুয়ারায় আজ শুক্রবার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এসব গুরুদুয়ারার মধ্যে ১৯৩৪ সালে তৈরি একটি পুরোনো গুরুদুয়ারাও রয়েছে।
 
অনুমতি প্রসঙ্গে শ্রী গুরু সিং সভার প্রেসিডেন্ট শেরদিল সিং সিধু বলেন, ‘যা ঘটছে, তা দেখে দেখে দিন পার করার কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আমরা জুমার জন্য গুরুদুয়ারা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’ তা ছাড়া, চলমান অবস্থার দ্রুত অবসান ঘটানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
 
যাদব ও শিখদের এ ধরনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় মুসলমানরা। ‘জমিয়তে ওলামায়ে-ই হিন্দে’র স্থানীয় প্রেসিডেন্ট মুফতি মুহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘এসব বিশাল ব্যাপার। এটা শুধু নামাজ পড়ার ব্যাপার নয়। সম্প্রীতির কাছে ঘৃণা পরাজিত হয়েছে।’
 
গুরুগ্রাম নাগরিক ঐক্য মঞ্চের সহপ্রতিষ্ঠাতা আলতাফ আহমদ বলেন, ভারত একটি মিশ্র সংস্কৃতির দেশ। এসব পদক্ষেপে সেটাই আবার প্রমাণিত হয়েছে। এ ধরনের কাজে প্রকৃত ভারতের পরিচয় ফুটে ওঠে। 
captcha